ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - সাজ্জাদ হোসেনের শব্দাবলী

সাজ্জাদ হোসেনের শব্দাবলী

অধরা মেয়ে

—————————
অধরা মেয়ে, আর কত অধরা
থাকবে তুমি? এই গন্দমছেঁড়া
জীবনকালে? এই মহা
আকালের খরদহনে?

হাজার বছর পথ হাঁটা, ক্লান্ত-শ্রান্ত
জীবনানন্দও তো শেষমেশ পেয়েছিল
বনলতার দেখা। শান্তিও তার
জোটেছিল দুদণ্ড।

আমি তো তোমায় খুঁজি প্রতি ন্যানো
সেকেন্ডে, ন্যানো ঘড়ির কাটায়।
করোটির নিউরনে শুনি
তোমার অনুরণন।

অধরা মেয়ে, তাতে লাভ কি, বল? আমি
তো তোমাকে ছুঁয়ে দেখতে চাই, ছুঁতে
চাই দশ আঙ্গুলে, আমার ক্ষুধাতুর
ব্রহ্মপুত্রের জলে।

চাই তোমার অক্টোপাস আশ্লেষ। চাই
চৌষট্টি কলা, চাই শ্বেদবিন্দু, চাই
চুম্বন, চাই নিষ্ঠীবন মধু, চাই
নিমেষে ক্লান্তিহর অমৃত সুধা।

অধরা মেয়ে, তোমাকে ধরব বলে
অনন্ত অলিম্পিকে আমি আজ মনগতির
দৌড়বিদ। প্রতিদ্বন্দ্বী আলোরা
পেছনে পড়েছে ঢের।

কোন সে সত্য যুগে গানশট ছুঁড়েছিল
বোধের ট্রিগার, দৌড়াব বলে। তখন
থেকেই সওয়ার হয়েছি মন পবনের
রফরফে, ভীষণ একাকী।

একে একে সব যুগ কেটে গেল, সব
যুগ কেটে যায়-ত্রেতা, দ্বাপর, কলি।
আলোকবর্ষ নয়, ছুটছি আমি সেই
মনবর্ষ ট্র্যাকে, তবু।

অধরা মেয়ে, আমাকে কীসের ভয়
তোমার? মজুরের হাত বলেই কি এত
অপছন্দ? অপছন্দ আমার এই
লবণ-লেপ্টানো দেহ?

তুমিই তো বলেছিলে জাদু আলিঙ্গনের
কথা, মুহূর্তে সব সম্ভব করা স্পর্শ, মন্ত্রকলার
কথা। তবে অার কীসের
ভয়, অধরা মেয়ে?

রবি বাবুর চেতনার রঙে পান্না সবুজ
হওয়ার গল্প তুমিই তো বলেছিলে, চুনির
রক্তলাল রহস্য তুমিই তো
বুঝিয়ে দিলে সেদিন।

অনেক হয়েছে, অধরা মেয়ে। আমার দৌড়ের
প্রান্তসীমায় এবার মূর্তমান হও রাজকন্যার
বেশে, আমাকে বানাও তুমি
শান্তির রাজপুত্তুর।

……………………

ফেসবুকে লাইক সমাচার
_____________________

সেল ফোনে বলছে কথা
মুড়ির বন্ধু খৈ-
‘ফেসবুকে দিচ্ছি যে পোস্ট
তোদের লাইক কই?
লিখছি ছড়া, কাব্য, নাটক
দিচ্ছি আরও ছবি,
হাল ফ্যাশনে এটাই আমার
মিশন, ভিশন, হবি।’

‘বলিস কি রে! আজ রাত্রে
লাইক দিয়েছি দুটি,
আগের দিন নেট প্রবলেম
নিয়েছিলাম ছুটি।’

‘বল তো দেখি আজ রাত্রে
কি দিয়েছি পোস্ট?
সঠিক জবাব পারলে দিতে
পাবি চিকেন রোস্ট।’

‘আমি শুধুই নাম দেখে যাই
আর যাই লাইক দিয়ে,
এত কি দোস্ত সময় আছে
পড়ব যে মন নিয়ে?
এক মিনিটে গোটা পঞ্চাশ
লাইকে প্রেস করি,
লাভ, ওয়াও, আরও কি সব
ছাই-ভস্ম ধরি।’

‘হায় অাল্লাহ! শুনলাম একি!
দু:খে মরে যাই।
ভুলেও কভূ আমার লেখায়
লাইক দিস না ভাই।
আমার লেখা আমারই থাক
চাই না ভুয়া তুষ্টি
সবটা পড়ে মন্দ বলিস
তাতেও পাব পুষ্টি।

………………….

বাজারের গান

(অবশ্যই বেসরকারি মজুর শ্রেণির)

___________________________________________

খরচ গাঙয়ের পেট ফুলেছে
ইনকাম বনসাই
সদাইপাতির পাগলা ঘোড়ার
লাগাম না যে পাই।

গ্যাসের দাম বাড়ছে বলে
বিজলি খিঁচায় কপাট খুলে
তারও নাকি মহামূল্য
হতে দেরি নাই।
সদাইপাতির পাগলা ঘোড়ার
লাগাম না যে পাই।

বাড়ির ভাড়া, ছেলের পড়া
মাছ-মাংস বেজায় চড়া
পকেটটা হয় খড়খড়া
সকাল-সন্ধ্যা তাই।
সদাইপাতির পাগলা ঘোড়ার
লাগাম না যে পাই।

যদি বলি-বেতন বাড়ান
মালিক বলে-চাকরি হারান
ভয়ে তখন কাঁপে পরাণ
কোন মসিবত ভাই।
সদাইপাতির পাগলা ঘোড়ার
লাগাম না যে পাই।

খরচ গাঙয়ের পেট ফুলেছে
ইনকাম বনসাই
সদাইপাতির পাগলা ঘোড়ার
লাগাম না যে পাই।

(সুমন বা নচিকেতার জীবনমুখি গানের ঢংয়ে কোন যুৎসই সুরে গাইতে হবে।
সুর দিতে আগ্রহীরা আগাম সালাম জানবেন।)

………………………………………………….

লেখক >> সাজ্জাদ হোসেন, সাংবাদিক, দৈনিক ইত্তেফাক ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...