দেবদাস মজুমদার >>
আজ বুধবার(২২ মার্চ) বিশ্ব পানি দিবস। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ সভা ২২ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব জল দিবস বা বিশ্ব পানি দিবস ( World Day for Water বা World Water Day) হিসেবে ঘোষণা করে।
১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের (ইউএনসিইডি) এজেন্ডা ২১-এ প্রথম বিশ্ব জল দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব জল দিবস পালিত হয় এবং তার পর থেকে এই দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি এই দিনটিকে নিজ নিজ রাষ্ট্রসীমার মধ্যে জাতিসংঘের জলসম্পদ সংক্রান্ত সুপারিশ ও উন্নয়ন প্রস্তাবগুলির প্রতি মনোনিবেশের দিন হিসেবে উৎসর্গ করেন। প্রতি বছর বিশ্ব জল দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার যে কোনো একটি বিশেষ কর্মসূচি পালন করে থাকে। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতিসংঘ-জল বিশ্ব জল দিবসের থিম, বার্তা ও প্রধান সংস্থা নির্বাচনের দায়িত্বে রয়েছে।
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও পরিচ্ছন্ন জল ও জলসম্পদ রক্ষা সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য এই দিন বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করে আসছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে। রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ উপলক্ষে বাণী প্রদান করেছেন। দিবসটি পালনের মাধ্যমে পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সবার সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন তারা।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বর্জ্য পানি’। এ উপলক্ষে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশ জুড়ে সরকারী বেসরকারী সংস্থা পানি দিবসে শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় দেশের সবাই এগিয়ে আসবেন বলে প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেছেন। তিনি বলেন, পানি দূষণ এবং জলবায়ুপরিবর্তনের প্রভাবে শুষ্ক মৌসুমে পানির অনিশ্চিয়তার কারণে খাদ্য উৎপাদন, পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ছে।
বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টি বা বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণে জনদুর্ভোগ এবং সম্পদের ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। এ সমস্যা সমাধানকল্পে পানিধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নদীসমূহের ড্রেজিং এবং খাল পুনঃখনন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে বলেও বাণীতে তিনি উল্লেখ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখার জন্য কৃষি, শিল্পসহ সকল ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য পানির প্রাপ্যতার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানির অত্যাধিক ব্যবহার, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ ও শিল্পায়ন, মারাত্মক পরিবেশ দূষণ, পানি প্রবাহে কৃত্রিম বাধা সৃষ্টি ও জলবায়ু পরিবর্তন সুপেয় পানির উৎসকে ক্রমশ অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আশা করেন, দিবসটি পালনের মাধ্যমে পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে সবার সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।