মো. আলমগীর হোসেন খান >>
উপকূলীয় পিরোজপুরের ঐতিহ্যবাহী মঠবাড়িয়া সম্ভাবনাময় একটি জনপদ। বলেশ্বর – বিষখালী নদীর মধ্যবর্তী মঠবাড়িয়া উপজেলা বাংলাদেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হিসেবে পরিচিত। এ এলাকার মানুষ জেলা শহর পিরোজপুর যেতে হলে বলেশ্বর নদী পার হয়ে নিয়মিত যেতে হয়। অফিসিয়াল বা আদালতের কাজে যথা সময়ে পৌছার জন্য ঐ মানুষটি জানেন কত কষ্ট করে যথা সময়ে পৌছতে হয় কিংবা যথা সময়ে না পৌছার কারনে কত বড় বিপদে(কোর্টের ক্ষেত্রে) পরতে হয়, কত গাল-মন্দ-বৎসনা শোনতে হয় অফিসিয়াল কাজে। ঝড় বন্যা হলে জীবনের ঝুকি নিয়ে পাড় হতে হয় বলেশ্বর নদী। যা ভূক্তভোগী ছাড়া কাউকে বুঝানো যাবে না।“কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে? কভূ আশি বিষে ধ্বংসেনি যারে”। এমন সমস্যায় যিনি বা যারা পড়েছেন তারাই জানেন বলেশ্বর আর বিশখালী নদী পাড় হয়ে জেলা সদরে গিয়ে জীবনের প্রয়োজনীয় কাজগুলো করা কত কষ্টের। মঠবাড়িয়া উপজেলা, প্রস্তাবিত মিরুখালী উপজেলাবাসী যেমনি বলেশ্বর নদী পাড় হচ্ছি তেমনি বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলাবাসী বিষখালী নদী পাড় হচ্ছি প্রতিনিয়ত। জেলা শহর অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি স্থান। যাকে প্রতিনিয়ত প্রয়োজন হয়। আর সেই গুরুত্বপূর্ণ স্থানটিতে যেতে যদি এত চড়াই- উৎড়াই পেরিয়ে যেতে হয় বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ তাহলে তো কষ্টের আর সীমা থাকলো না। কিংবা আমাদের এলাকার জ্ঞানী-গুনী-সৃজনশীল-সুশীল মানুষগুলোরতো আর মূল্য থাকে না। ১৮৫৯ সালে বলেশ্বর ও বিশখালী নদীর মধ্যবর্তী এলাকা নিয়ে মঠবাড়িয়া থানা গঠিত হয়েছিল। ঐ সময়ে বর্তমান ভান্ডারিয়া, কাঠালিয়া, বামনা, পাথরঘাটা থানা মঠবাড়িয়া থানার অন্তর্গত ছিল। প্রশাসনিক, শিক্ষা, যোগাযোগ সহ সকল ধরনের সুবিধা গ্রহনের জন্য মঠবাড়িয়া থানা থেকে ১৮৭২ সালে ভান্ডারিয়া, ১৯১৩ সালে বামনা, ১৯১৮ সালে কাঠালিয়া এবং ১৯২৪ সালে পাথরঘাটা থানা গঠিত হয় প্রত্যেক থানার সৃজনশীল ব্যক্তিদের প্রচেষ্টায়। আজো আপনাদের বেরিয়ে আসতে হবে দীর্ঘদিনের জেলা সদরে যেতে নদী সাঁতরানোর কলংক মুছে নিজেদের এলাকায় জেলা সদর তৈরী করতে। দীর্ঘদিনের দুঃখ দূর্দশা লাঘব করে নতুন চেতনায় আবার জেগে উঠতে। বামনা, পাথরঘাটা, প্রস্তাবিত মিরুখালী ও মঠবাড়িয়া উপজেলার মানুষ জাগ্রত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মঠবাড়িয়া জেলা ঘোষণার নেতৃত্ব, আন্দোলন, সংগ্রাম, মিছিল, মানববন্ধনে সমবেত হতে।
লেখকঃ মোঃ আলমগীর হোসেন খান, অধ্যক্ষ, মিরুখালী স্কুল এন্ড কলেজ, মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর।