ব্রেকিং নিউজ
Home - এক্সক্লুসিভ - দুর্নীতি মুক্ত জীবন চাই

দুর্নীতি মুক্ত জীবন চাই

মো. ইমন >

corruption more corrupt যদি ভাবি ১৯৪০ এ শেরে বাংলার উত্থাপিত তাহার দেশের জনগনের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের চিন্তা কিংবা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ,এই দুই স্বাধীনতার মহাপুরুষেরা কি স্বপ্নেও কল্পনা করিতে পারিয়াছিলেন যে, কাহাদের তেনারা স্বাধীনতার সূর্যটি জীবনের বিনিময়ে দান করিয়া যাইতেছেন? বাঙ্গালি এমন এক জাতি,যাহাদের কৃতজ্ঞতাবোধের লেশবিন্দুও নাই ! যে স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধু দিয়া গেলেন, সেই স্বাধীন দেশে প্রত্যেক যুগে এই বাঙ্গালিরা কি করিয়াছে? এক একটা উন্নয়ন পঞ্চবার্ষিকী যদি বঙ্গবন্ধু স্ব-হস্তে মাঠ পর্যবেক্ষণ করিয়া দেখিতেন তবে অবাক হইতেন বৈকি! ভাবিতেন খোদা কাহাদের জন্য ডাক দিয়াছিলেন সংগ্রাম!! এদেশে সেই আমল হইতেই চুরি নামক এক বিষেশ শব্দ রহিয়াছে, তৃণমূলের সেই চৌকিদার হইতে সচিব পর্যন্ত, সকলেই সেই চোরা নামক শব্দে অ্যাখ্যায়িত হন,তবে তাহাদের কর্ম দৃষ্টির অগোচরে,ইহারা আঁধার জগতের রাজা। যে হারে দুদক তাহাদের কর্মকান্ড টিপটিপ করিয়া জ্বালাইতেছে,তাহাতে চোরের উৎপত্তি দিনকে দিন, এক যুগ হইতে আরেক যুগে বহমান হইয়াছে। এই চুরিকে আমাদের সমাজের শিক্ষিতমহলেরা নাম দিয়াছেন দূর্নীতি। ইহাও এক ধরনের নীতি। ইংরেজ আমলে কোম্পানির ৭০ টাকা বেতনের কর্মচারীরা ২০,০০০ টাকার মালিক হইয়াছিলেন এই নীতির মাধ্যমে। শাসকমহল কিংবা সাধুমহল, সকলেই দৃষ্টির অগোচরে এই নীতিকে শ্রদ্ধা করেন,অনুসরন করেন,এক যুগ হইতে আরেক যুগে টানিয়া নিয়া চলিয়াছেন,ইতা তাহাদের বিষেশ কর্তব্য। ইহা তাহাদের ধর্মও,রক্তে মিশিয়া গিয়াছে, তাইতে বংশ পরস্পর চলিয়া আসিতেছে। প্রত্যেক যুগে সমাজে দুইটা শ্রেণির কার্যকলাপ চক্ষুতে দেখিয়াও চক্ষু বুঝিয়া থাকিয়াছেন আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষরা। এক যাহারা দূর্নীতি করেন,আরেক যাহারা পারিতেন ইহার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করিতে তবুও নিশ্চুপ রহিয়া গিয়াছেন যুগান্তরে। অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে । স্বাধীনতা পরবর্তী প্রত্যেক সরকার কিংবা সামরিক শাসক উন্নয়ন দেখাইতে ব্যস্ত ছিলেন,দূর্নীতি লাঘব করিতে নয়। এমন কোন খাত নাই যাহা প্রশ্নবিদ্ধ নয়,নিয়োগ হইতে নির্মাণ । সব খাত। যদি সুষ্ঠু তদন্ত করিতে সমর্থ হন,তবে বক্তব্যের সত্যতা বুঝিতে সমর্থ হইবেন। রাজনৈতিক নেতা,চিকিৎসক শিক্ষক ,সবাই ব্যতিব্যস্ত, সবাই প্রতিযোগিতায় আছেন প্রত্যেক যুগে কতটা সমাসীন হওয়া যাতে দূর্নীতিতে। ঐদিকে অফিসে বসিয়া লাল ফিতার দৌড়াত্মে দূর্নীতিকে সুষ্ঠু ভাবে লালন করিয়া চলিতেছেন আরেক সহোদর। শুধু যারা এই ঘুষের সাথে জড়িত তাহাদেরই দোষ নয়,তাহাদের ঘুষ নেবার সুযোগ কারা তৈরি করিয়া দিল? বাঙ্গালি বড় অধৈর্য জাতি। সময়কে সামনে টানিয়া আনিবার এক প্রকার চেষ্টা তাহারা প্রথমে এই ঘুষের মাধ্যমে কর্তাদের শিখাইল। প্রত্যেক যুগে সন্তানদের চাকুরির জন্য পিতামাতা ঘুষের অর্থ যোগাইয়া রাখিত। ঐ সন্তান চাকুরি পাইয়া যে বেতন পাইত,তাতে ঘুষের অর্থ তুলিতে আরও বিশ বৎসর লাগিয়া যাইবার কথা। কিন্তু বাস্তবিকভাবেই ঐ সন্তানও দূৃৃর্নীতি নামক রাজ্যের সদস্য হইতে ইচ্ছুক হইতে বাধ্য থাকে। এতে তাহার দোষ কোথায়? আমাদের উদ্ভুদ মূল সমস্যা কোথায়? আর সমাধান করিতে কে আসিবে? প্রথমত শিক্ষার বড্ড অভাব। আপনি বলিবেন,উন্নত দেশে বেকার ভাতাও সরকার প্রদান করে,তবে মনে রাখ, ঐ দেশের উন্নত হইতে ঐ জাতি যে বিসর্জন দিয়াছে,তোমারও সেইরুপ বিসর্জন দাও। তুমি শিক্ষাটা সুন্দরভাবে গ্রহণ কর। চরিএ ঠিক কর। আমি তোমাকে ঘুষ ব্যতিত চাকরি দিব, তুমি আমাকে দূর্নীতি মুক্ত জীবনটি উপহার দাও। আমি তোমার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করিয়াছে,তবে তুমি কেন দূর্নীতি মুক্ত জীবন গড়িবে না? তোমার চাহিদা পূরন করিতে রাষ্ট্র বদ্ধপরিকর,তবে তুমি কেন দূর্নীতি করিবে? কর্তাদের বলছি,যুগের পর যুগ দূর্নীতি করিয়া তো দেখিয়াছেন,কি ফল পাইয়াছেন? মৃত্যু কিভাবে হইবে বুঝিতে পারেন নিশ্চয়ই। আপনার সন্তানটা কেন মানুষ করিতে পারিলেন না?? ভাবিয়াছেন? সততার পুরস্কার হইবেই। শান্তিতে একটা রাত্রি ঘুমাইতে পারেন না,ঘুমের ঔষধ টিপিতে হয়,অথচ একজন ভিখারি কিংবা চাষাও আপনার অপেক্ষা সুখি। কি করিবেন ঘুষের অর্থ দিয়া? শান্তি কিনিতে পারিবেন? অর্থই অনর্থের মূল,যে গদিতে বসিয়াছেন,বহু কথা মুখস্ত করিয়াই তো বসিয়াছেন, আপনার স্থলে চাষা বসিলেও একটা দূর্নীতির স্পর্ধা করিতে পারিত না, দেশটা স্বাধীন আপনার রক্তে হয় নাই, আপনার বাপ-দাদারা রক্ত এই কারনে দেয় নাই যাতে দূর্নীতি করিবেন, ভাবুন যদি দেশ স্বাধীন না হইত, তবে চেয়ার সারাজীবন দেখিয়া যাইতেন, বসিতে পারিতেন না, ঐ পাকিদের নীতির কাছে। তাই,স্বাধীনতার মূল্য বোঝার চেষ্টা করুন। আপনাদের মত মুখোশধারী ভদ্র এবং শিক্ষিত সম্প্রদায়রা, যুগ হতে যুগ দূর্নীতি টানিয়া লইয়া যান, আর এসবের ফল দিতে হয় ঐ দরদ্রি চাষা আর মধ্যবিত্ত নামক শ্রেণিদের, যাহারা হাত পাতিতে পারে না,খালি পেটে বিনিদ্র যাপন করে। ঐ নিম্ন শ্রেণির উন্নতির জন্য একটা দিন ব্যয় করুন, যদি ভাল না লাগে তবে দূর্নীতি করেন, আপত্তি নাই। দূর্নীতিকে শুধু দূর্নীতিগ্রস্থ করিয়া কি ফল পাইলেন? আপনার সন্তানকে প্রশ্ন করুন, সে আপনার হাতে উপার্জিত দূর্নীতির খাবার খাইতে চায় না কি সততার উপার্জিত খাবার খাইতে ইচ্ছুক? আপনার পিতামাতাকে প্রশ্ন করুন, যে ঔষধ খাওযান, যে লাশটার কাফনের কাপড় কিনিবেন, সেটা কি, দূর্নীতির অর্থের? তবে লাশও কাঁপিয়া উঠিবে । বের হইতে চাইবে দূর্নীতিতে কেনা কাফন হইতে !

লেখক > মো. ইমন , শিক্ষার্থী মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...