দেবদাস মজুমদার >
পিরোজপুরের কাউখালীতে একটি দুগ্ধবতী গাভী পাগলা কুকুরে কামড়ের পর মৃত্যু ঘটলে ওই গরুর দুধ পানকারী একটি কলেজের ২৩জন শিক্ষক-কর্মচারীর মাঝে জলাতংক রোগের আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় আতংক বিরাজ করছে। আতংকিত সংশ্লিষ্ট ২৩জন ইতিমধ্যে জলাতংক রোগের প্রতিশেষদক হিসেবে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। দুধপানে আতংকগ্রস্তরা সকেলই কাউখালী উপজেলা সদরের কাউখালী মহিলা ডিগ্রী কলেজের গভর্নিংবডির সদস্য,শিক্ষক ও কর্মচারীসহ মোট ২৩জন আতংকের মধ্যে রয়েছেন। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তবে দুগ্ধবতী গাভীটির মালিক ওই কলেজের কর্মরত চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আয়া রোকসানা বেগম ডালিম পাগলা কুকুরের কামড়ে দুগ্ধবতী গাভীটি মারা যাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
কাউখালী মহিলা ডিগ্রী কলেজ সূত্রে জানাগেছে, কেেলজে কর্মরত আয়া(চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী) রোকসানা বেগম ডালিমের একটি গাভী গত ২০ দিন আগে একটি বাচ্চা প্রসব করে। এরপর দুগ্ধবতী গভীটিকে একটি পাগলা ককুরে কামড়িয়ে আহত করে। অসচেতন আয়া বিয়টি গুরত্ব না দিয়ে কুকুরে কামড়ানো দুগ্ধবতী গাভীর দুধ গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারী) নিজের বাড়িতে জ্বালিয়ে কলেজে নিয়ে আসেন । নতুন গাভীর দুধ সে কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের মুড়ি দিয়ে আপ্যাায়ন করেন। ওই নতুন গাভীর দুধ কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ কলেজের ২৩জন শিক্ষক কর্মচারী পান করেন। এসময় দুধপান কারীরা গাভীটি পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত হওয়ার বিষয়টি জানতেন না। এর পাঁচদিন পরে গত বৃহস্পতিবার(৯ ফেব্রুয়ারী) দিবাগত রাতে পাগলা ককুরে আক্রান্ত দুগ্ধবতী গাভীটি গোয়ালে মারা যায় । এখবর ছড়িয়ে পড়লে ওই গরুর দুধ পানকারী কলেজের ২৩জন শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে জলাংতক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় আতংক দেখা দেয়। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। প্রাণভয়ে দুধপানকারী সকলেই চড়া মূল্যে জলাতংক রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ইনজেকশন নেন।
এ বিষয়ে কাউখালী মহিলা ডিগ্রী কলেজের ভূক্তভোগি প্রভাষক ও পিরোজপুর জেলা পরিষদ সদস্য শাহীন রেবেকা চৈতী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, তিনিও কলেজের সবার সাথে ওই গরুর দুধ পান করে এখন আতংকগ্রস্ত হয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। দুগ্ধবতী গাভীটি পাগলা কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছিল এ বিষয়টি কারও জানা ছিলনা। গাভীর মালিক অসচেতন আয়া কলেজের কাউকে তা অবহিত করেননি। গরুটি মারা যাওয়ার পর বিষয়টি প্রকাশ পেলে দুধপানকারী ২৩জন শিক্ষক-কর্মচারী জলাতংকে আক্রান্ত হওয়ার আশংকায় আতংকিত হয়ে পড়েন। তিনি আরও জানান, আতংকিত সকলেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ইনজেকশন নিচ্ছেন।
তবে এ ব্যাপারে গাভীর মালিক ওই কলেজের আয়া রোকসানা বেগম ডালিম দাবি করেছেন, তার গাভীটিকে পাগলা কুকুরে কামড় দেওয়ার খবর সঠিক নয়। গাভীটি রোগে ভুগে বৃহস্পতিবার রাতে হঠাত মারা গেছে।
এ বিষয়ে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকলপনা কর্মকর্তা ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান বিষযটির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাগলা কুকুরে কামড়ানো গরুর দুধপানে জলাতংকের ঝুঁকি থাকে। সে ক্ষেত্রে কেউ না জেনে ওই গরুর দুধ পান করলে তাকে সাথে সাথে প্রতিষেধক ভ্যাকসিন নিতে হবে। কাউখালী মহিলা ডিগ্রী কলেজের ২৩জন শিক্ষক কর্মচারীরা গরুর দুধপানে আতংকগ্রস্ত । তাদের প্রতিশেষধক ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তবে প্রতিষেধকটি নিতে তাদের কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেছে । আশা করছি আতংকিত হওয়ার কিছু নেই।