ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - মঠবাড়িয়ার শৌলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় : স্কুল ভবনের মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আর সভাপতির বিরুদ্ধে

মঠবাড়িয়ার শৌলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় : স্কুল ভবনের মালামাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আর সভাপতির বিরুদ্ধে

 

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি >

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার শৌলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পুরাতন স্কুল ভবন অপসারনের নামে স্কুল ভবনের ইট আর ভবনের যাবতীয় মালামাল আত্মসাত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আর স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

অভিযোগ উঠেছে পরিত্যাক্ত স্কুল ভবনটি সরকারি বিধি- বিধান/ পরিপত্র অনুসরণ না করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবিএম ছিদ্দিকুর রহমান আকন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন হালদার ও সহকারী শিক্ষক সওগাতুল আলম ছগিরের যোগসাজেসে পুরাতন প্রায় ৪০/৫০ হাজার ইট , কাঠ, টিন, গ্রীল, দরজা, ও লোহার জানালা সহ আত্মসাত করেছেন।
এ স্কুল ভবনের মালামাল আত্মসাতের বিষয়ে স্থানীয় দুই অভিভাবক মো. শিবলী মোল্লা ও রাজিব কুমার লাল্টু স্কুল ভবন আত্মসাতের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে জানাগেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী ইউনিয়নের শৌলা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত অর্থ বছরে পুরাতন টিনশেড স্কুল ভবন অপসারন করে একটি এক তলা ভবনের ওপপর দ্বিতল ভবন সম্প্রসারণ এবং নতুন একটি দ্বিতল পাকা ভবনের কাজ শুরু হয়। যে স্থানে নতুন দ্বিতল ভবন এর নির্মাণ কাজ কাজ চলছে সেখানের পরিত্যাক্ত ভবনটি স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন নিলাম ছাড়াই অপসারন করে নেয় । ওই পরিত্যাক্ত ভবনটি সরকারি বিধি- বিধান/ পরিপত্র অনুসরণ না করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবিএম ছিদ্দিকুর রহমান আকন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন হালদার ও সহকারী শিক্ষক সওগাতুল আলম ছগির মিলে পুরাতন স্কুল ভবনের সম্পূর্ণ মালামাল ভাগবাটোয়ারা করেন নেন। আত্মসাতকৃত ভবনে ৪০/৫০ হাজার ইট , কাঠ, টিন, গ্রীল, দরজা, ও লোহার জানালা সহ আত্মসাৎ করা হয়েছে।

স্থানীয় অভিভাবক শিবলী নোমান অভিযোগ করেন, সরকারী বিধি-বিধান পরিপত্র অনুসরণ করে নিলামে পুরাতন স্কুল ভবন বিক্রি করার কথা। সরকারী বিধি রেমাতাবেক বিক্রি করলে দুই থেকে তিন লাখ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হত । কিন্ত বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি কোন রকম রেজুলেশন করে উল্লেখিত মালামাল লোক দেখানোর জন্য কিছু মালামাল নিজেদের উদ্যোগে বিক্রি করেছে বাকী মালামাল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ,প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষক মিলে আত্মসাত করেন।

জানাগেছে, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ৩১/০১/১৯৯৬ তারিখের শিম/শা: ১০/১কমিটি ৮/১২/২০১৪ তারিখের ৩৭.০০.০০০০.০৭১.০৯.০০২.০৭-১০১২ সংখ্যক পরিপত্র দুটি সরকারী অব্যবহৃত / অকেজ/ ভবন/ মালামাল বিক্রি করতে হলে স্থানীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কনডেমনেশন কমিটির মাধ্যমে বিক্রি/ নিলামের কথা উল্লেখ রয়েছে। পরিপত্র অনুযায়ী এ কনডেমনেশন কমিটির সভাপতি হবেন জেলা প্রশাসক। অথচ ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে পুরো ভবনের মালামাল নিজেদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করে নেন।

স্থানীয়রা আরও অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সওগাতুল আলম রাতের আঁধারে ভবনের ইট সরিয়ে নিয়ে নিজের বাড়িতে গৃহ নির্মাণের কাজে লাগিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন হালদার তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষযটি স্থানীয়রা অভিযোগ দিলে ২৯ নভেম্বর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। এ সময় ভবন বিক্রির যাবতীয় কাগজপত্র দাখিল করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, নতুন ভবন নির্মাণ শুরুর সময় ঠিকাদারের জরুরী তাগাদার কারনে স্কুলে রেজুলেশন করে পুরানো ভবনের মালামাল বিক্রি করতে হয়েছে । বিক্রয়কৃত টাকায় স্কুলের শহীদ মিনার উন্নয়ন ও বনায়নে ব্যয় করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রমেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, অভিযোগের বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারী ভবন বিক্রির যথাযথ বিধি মানা হয়নি। এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন তৈরীর করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তা পাঠানো হবে।

পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মো. খায়রুল আলম সেখ বলেন, স্কুল ভবন পরিত্যাক্ত হলে পরিপত্রের বাইরে বিক্রির কোন সুযোগ নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...