ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - মঠবাড়িয়ায় দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর হন্তারক মায়ের বিষ পানে আত্মহত্যা

মঠবাড়িয়ায় দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর হন্তারক মায়ের বিষ পানে আত্মহত্যা

দেবদাস মজুমদার >

পিরেজপুরের মঠবাড়িয়ায় অবুঝ দুই মেয়ে শিশু সন্তানকে হত্যার পর হত্যাকারী মা বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে। উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের হারজী নলবুনীয়া গ্রামে আজ রবিবার বিকালে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থল হতে মা নাজমুন্নাহার লাইজ(২) ও দুই শিশু কন্যা দুই বছর বয়সি মাইশা আক্তার ও আট মাস বয়সি মাহিয়া আক্তারের লাশ উদ্ধার করেছে। কি কারনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কারন পুলিশ উদঘাটন করতে পারেনি । তবে দাম্পত্য কলহের জের ধরে মা তার দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর নিজে বিষ পানে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর স্বামী স্কুল শিক্ষক মনিরুজ্জামান ফরিদ খান পলাতক রয়েছেন। শিক্ষক মনিরুজ্জামান মঠবাড়িয়ার হারজী নলবুনীয় গ্রামের বাহার আলী খানের ছেলে। সে উপজেলার গুদিঘাটা সরোজিনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত।

থানা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার দাউদখালী ইউনিয়নের হারজী নলবুনয়িা গ্রামের স্কুল শিক্ষক মনিরুজ্জামান ফরিদ খানের সাথে উপজেলার তুষখালী গ্রামের আব্দুর রব তালুকদারের মেয়ে নাজমুন্নাহার লাইজুর পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়। এ দম্পতির সংসারে দুই শিশু কন্যা মাইশা(২) ও মাহিয়া(৮ মাস) রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। সম্প্রতি মনিরুজ্জামান ও নাজমুন্নাহারের মধ্যে বিবাদ হলে মনিরুজ্জামানের শ্বশুর আব্দুর রব বাড়িতে এসে তা মিমাংশা করে দেন। আজ রবিবার মনিরুজ্জামান নিজের কর্মস্থল স্কুলে চলে যান। ঘরে তখন স্ত্রী নাজমুন্নাহার ও তার দুই শিশু কন্যা মাইশা ও মাহিয়া ছিল। দুপুরের পর নাজমুন্নাহার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে দুই অবুঝ শিশুকে বিষ পান করিয়ে হত্যা করে। পরে সে নিজে বিষ পান করে আত্মহত্যা করে। এসময় ঘরের দরোজা বন্ধ ছিল। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে স্বামী মনিরুজ্জামান স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের মেঝেতে মা ও দুই শিশু সন্তানকে পড়ে থাকতে দেখেন। তার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। পরে স্থানীয় এক গ্রাম্য চিকিৎসককে খবর দিলে তিনি এসে তিনজনকে মৃত বলে জানান। এরপর নিহত নাজমুন্নাহারের স্বামী স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ গরের মেঝেতে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশেীরা থানায় খবর দিলে পুলিশ সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে এসে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে।

এই মর্মান্তিক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে শত শত গ্রামবাসি ওই বাড়িতে ভীড় করেন। তবে কি কারনে এ ঘটনা ঘটেছে তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেনা।

এ বিষয়ে নিহত গৃহবধূ নাজমুন্নাহারের শোকার্ত বাবা আব্দুর রব তালুকদার স্বীকার করেন,তার মেয়ে জামাইয়ের মধ্যে দাম্পত্য বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি তিনি এসে উভয়ের মধ্যে সমঝোতা করে মিমাংশা করে দিয়ে যান। এসময় তার মেয়ে তার দুই শিশু সন্তানকে লালন পালনে নানা সমস্যা হচ্ছে বলে তাকে জানিয়ে ছিল।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কি কারনে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কারন এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মা ও দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে ।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...