ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - মঠবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ গোলাগুলি একজন নিহত-আহত ১০

মঠবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ গোলাগুলি একজন নিহত-আহত ১০

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি > মঠবাড়িয়ায় দিনভর ছাত্রলীগের বিবদমান দুইটি পক্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। উপজেলা আ’লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল আহসান টুকু (৫০)কে লোহার রড ও হাতুড়ী দিয়ে প্রতিপক্ষরা পিটিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনার পর মঠবাড়িয়া পৌর শহরে উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের বিবদমান দুই পক্ষ দিনভর দফায় দফায় সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় লিটন পণ্ডিত(৩০)নামে এক যুবলীগ কর্মী নিহত হন। নিহত লিটন মঠবাড়িয়া পৌর শহরের কলেজ পাড়ার বাসিন্দা মো. আমীর হোসেনের ছেলে। তার শরীরে ২২টি ছররা গুলি বিদ্ধ হয়।
এসময় গুলি ও পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেল ও রাবার বুলেটে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। শহরের বিছিন্ন কয়েকটি স্থানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষ দফায় দফায় সশস্ত্র সংঘর্ষের সময় আজ বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে কাপুড়িয়া পট্রি ,পিয়াজহাটা ও কেন্দ্রী হরিমন্দিও এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এ সংঘর্ষের সময় গুলিতে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের ভাগ্নে শরীফুল ইসলাম রাজু(২৫), উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান সিফাত, আ.লীগ কর্মী সিদ্দিকুর রহমান(৪৮), পৌর কর্মচারী মো. ফারুক হোসেনও রাশেদ নামে ১০ বছর বয়সী একটি শিশু গুলিতে আহত হয়। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত ছাত্রলীগ নেতা শরীফুল ইসলাম রাজুকে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
হাসপাতাল ও স্থানীয়দের সূত্রে জানাগেছে, আজ সোমবার সকালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আহত ও প্রত্যক্ষ দর্শী সূত্রে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আ‘লীগ নেতা নাজমূল হাসান টুকুর সাথে প্রতিবেশী হালিম হাওলাদারের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। আজ সকালে ওই বিরোধের জের ধরে স্থানীয় গুদিঘাটা নামক স্থানে আ’লীগ নেতা টুকু গেলে পূর্বে ওত পেতে থাকা প্রতিপক্ষ হালিম, তার পুত্র কবির ও ছগির তার ওপর হামলা চালায়।
দুপুরে আ’লীগ সভাপতি রফিউদ্দিন আহম্মেদ ফেরদৌসের সমর্থক টুকুর উপর হামলার জের মিটাতে তার সমর্থকরা উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থিত আল-আমিন (২৫) এর উপর হামলা চালায়। এ ঘটনা ছড়িয়ে পরলে সোমবার বিকেলে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থিত দু’ই গ্রুপ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। দুই ঘন্টাব্যাপী তান্ডবে পৌর শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাজারের দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায় উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকরা পৌর মেয়র এর বাস বভনের মধ্যে রাখা ১১টি মটর সাইকেল ভাংচুর করে। এ সময় দেশীয় অশ্রসহ দুই গ্রুপ গোলাগুলি করলে আল আরাফা ব্যাংকের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থক যুবলীগ কর্মী লিটন পন্ডিত মারা যায় ।
বিকাল সোয়া পাঁচটার দিকে শহরের পিয়াজহাটা ও কাপুড়িয়া পট্রি আলাকায় দুই পক্ষ মারমুখি হয়ে গোলাগুলির ঘটনা ঘটায়। এসময় আল আরাফা ব্যাংক এলাকায় বিক্ষিপ্ত গুলিতে যুবলীগ কর্মী লিটন পণ্ডিত নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই সংঘর্ষের সময় গোটা পৌর শহর রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এসময় গুলি, টিয়ারসেল ও হামলায় অন্তত ১৫জন আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।

মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ছাত্রলীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষেও সময় পৌর মেয়রের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। সেখানে কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাংচুর ও মেয়রের বাসভবনে হামলার চেষ্টা হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারসেল ও ৫ রাউ- ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। অপরদিকে শহরের সংঘর্ষকারীদেন বিক্ষিপ্ত গুলিতে লিটন পণ্ডিত নামে একজন নিহত হন।
ওসি জানান শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় কোন পক্ষ হতে কেউ লিখিত অভিযোগ এখনও দায়ের করেনি।

পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মো. ওয়ালিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে পৌর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সর্বশেষ এ ঘটনায় শহরের পরিস্থিতি থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সন্ধ্যার আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে শহরের পরিস্থিতি থমথমে বিরাজ করলে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...