ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - প্রধান শিক্ষকের টেবিলে পা তুলে স্কুলের দাতা সদস্য বললেন এ স্কুল আমার বাপ দাদার আমি যা বলবো তাই শুনতে হবে !

প্রধান শিক্ষকের টেবিলে পা তুলে স্কুলের দাতা সদস্য বললেন এ স্কুল আমার বাপ দাদার আমি যা বলবো তাই শুনতে হবে !

পিরোজপুর প্রতিনিধি <>

আমেরিকা প্রবাসি সত্তোরোর্ধ বয়সী মোহাম্মদ ইউনুস মোল্লা নিজ গায়ের সরকারী একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জমিদাতা সদস্য। অভিযোগ উঠেছে দাদাতা সদস্য হওয়ার সুবাধে আমেরিকা প্রবাসি মোহাম্মদ ইউনুস বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সাথে অনৈতিক ও অগ্রহণযোগ্য আচরণ করে আসছেন। সম্প্রতি এ দাতা সদস্য দেশে এসে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের ওপর অযাচিত খবরদারি শুরু করেন। তিনি শিক্ষকদেও সাথে বাক বিত-া শুরু করেন। একপর্যায় দাতা সদস্য ইউনুস স্কুলের প্রধান শিক্ষকের টেবিলের ওপর পা তুলে শিক্ষকদের ধমকান। স্কুলের শিক্ষার্থীদের সামনেই শিক্ষকদেও জুতা নিয়ে মারতে উদ্যত হন। বলে ওঠেন, এ স্কুলের আমি জমি দাতা সদস্য, এ স্কুল আমার, স্কুল আমার বাপ দাদার। আমি যা বলবো তা সব শিক্ষকদের শুনতে হবে !

পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার ৪৭ নম্বর মধ্য শিয়ালকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপরে স্কুল চলাকালিন জমিদাতা সদস্য মোহাম্মদ ইউনুস মোল্লা এমন বিব্রতকর কা- ঘটান। তিনি গত কয়েককদিন ধরে স্কুলের শিক্ষকদের উপর নানা ধরনের অযাচিত খবরদারি করে তাদের অপমান অপদস্ত করে আসছেন ।

শিক্ষকদের অভিযোগ, আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টার পরে স্কুলের দাতা সদস্য ইউনুস মোল্লা স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে টেবিলের উপর পা তুলে জমিদারি ভাষায় শিক্ষকদের নানারকম আদেশ নির্দেশ করতে থাকেন । একপর্যায়ে এ নিয়ে শিক্ষকদের সাথে বাক বিত- শুরু হলে তিনি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসসমিনকে পায়ের জুতা খুলে মারতে উদ্যত হন । এমন ঘটনায় স্কুলের শিক্ষ ও শিক্ষার্থীরা হতবাক হয়ে পড়েন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াসমিন জানান, দাতা সদস্য ইউনুস মোল্লা বিদ্যালয়ে এসে তার কাছে স্কুলের স্টিল আলমিরার চাবি চান । তিনি চাবি দিতে অপরাগত প্রকাশ করায় তার ওই দাতা সদস্য ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে নানা রকম নানা অশ্লীল মন্তব্য করেন। এরপর শিক্ষক হাজিরা খাতা খুলে তিনি উল্টা পাল্টা মন্তব্য লেখেন ও শিক্ষকদের ধমাকান।
এক পর্যায় তিনি পায়ের জুতা খুলে শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের সামনেই তাকে মারতে উদ্যত হন । উচ্চ স্বরে তিনি বলেন, আমি স্কুলের জমিদাতা সদস্য । এই স্কুল আমার, আমার বাপ দাদার । আমি যা বলব শিক্ষকদেরকে তা শুনতে হবে । এই বলে শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের আদেশ নির্দেশ করতে থাকেন । তার উচ্চস্বরে হুমকি-ধামকিতে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয় ।

এদিকে দাতা সদস্যের স্কুলে এসে এমন আচরণে ক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা শিক্ষকদের প্রতি এমন অপমানের বিচার দাবি করে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ করে ।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আফরোজা আক্তার এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্কুলের দাতা সদস্যের এমন আচরণ বিব্রতকর । আমরা ক্ষুব্দ শিক্ষকবৃন্দ এমন ঘটনার বিচার দাবি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ অভিযোগের বিষয়ে স্কুলের দাতা সদস্য মোহাম্মদ ইউনুস মোল্লার মোবাইল নম্বরে একাধিক কল করলে তার ফোন সেট বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল হাকিম বলেন, স্কুলের দাতা সদস্য এমন আচরণ অনৈতিক। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ছাড়া শিক্ষক হাজিরা খাতায় অন্য কেউ মন্তব্য লেখার অধিকার রাখেন না । এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কাউখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মিয়া মনু সাংবাদিকদের বলেন, আমি লোকমুখে স্কুলের ঘটনাটি শুনেছি । বিষয়টি দু:খজনক। শিক্ষকরা সুনির্দিষ্ট দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...