ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - মর্মান্তিক !

মর্মান্তিক !

মির্জা খালেদ,পাথরঘাটা >>

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় পেট্রল ঢেলে ঘরে আগুন দিয়ে এক সৎ মেয়ে ও তার মাকে (স্ত্রী) পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা করে বেল্লাল নামের এক যুবক। বুধবার দিনগত রাত দু্ইটার দিকে থরঘাটা উপজেলার সদর ইউনিয়েনের রুহিতা গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে মেয়ে কারিমার (১০) মৃত্যু হয়। পরে বেল্লাল বাড়ি থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে গিয়ে গাছের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। স্ত্রী সাজেনুর বেগমের (৩০) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল মেডিক্যালে পাঠান হয়েছে।
বেল্লালের বাড়ি জেলার তালতলী উপজেলায় সখিনা গ্রামে। প্রায় দেড় বছর আগে রুহিতা গ্রামের সাজেনুরকে চট্রগ্রামে পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় বিয়ে করে। এবং ১৫ দিন আগে স্ত্রী (সাজেনুর) স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে তাকে তালাক দেয়। কারিমা সাজেনুরের পূর্বের স্বামী মো. হাসানের কন্যা।

স্থানীয় জনগণ ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১২ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার সদর পাথরঘাটা ইউনিয়নের রুহিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) সকালে মৃত কারিমার মা সাজেনুরকে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারিমা ও বেল্লালের মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে পাথরঘাটা থানায় নিয়ে আসে। এদিকে সাজেনুরকে চিকিৎসক জন্য পাথরঘাটা উপজেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার অনুদান দেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান।

সরেজমিন গিয়ে এবং প্রত্যক্ষ্যদর্শী সাজেনুরের চাচাতো ভাই মো. ইব্রাহিম জানান, বেল্লাল হোসেন বাড়ি বরগুনার তালতলী উপজেলার ছকিনা এলাকায়। প্রায় দেড় বছর আগে সাজেনুরের সাথে বেল্লালের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলতে থাকে। এ নিয়ে স্থানীয় পর্যায় একাধিকবার সালিস হয়। সালিসের মাঝে প্রায় সময়ই বেল্লাল হোসেন মা-মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিত।

সাজেনুরের ফুফাতো বোন ফাতেমা বেগম বলেন, আমার বোন সাজেনুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেছেন, ঘর দাউ দাউ করে যখন জ্বলছিল তখন সাজেনুর ও তার মেয়ে কারিমা আক্তার ঘর থেকে বের হতে চাইলে মা-মেয়েকে রামদা দিয়ে ধাওয়া করলে ঘর থেকে আর তারা বের হতে পারে নাই। এতে ঘটনাস্থলেই ঘরের মধ্যে আগুনে পুড়ে মেয়ে কারিমা মারা যান। আর মা সাজেনুর শরীরের ৮০ ভাগই পুড়ে যায়।

রুহিতা গ্রামের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) মো. হারুনার রশিদ প্রতিনিধিকে জানান, বেলাল সব সময় টাকার লোভী ছিল, স্ত্রীর সকল আয় সে কেড়ে নিত। সে ইতিপূর্বে ৫/৬টি বিয়ে করেছিল।

পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, সাজেনুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার শরীরের ৮০ ভাগই পুড়ে গেছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

পাথরঘাটা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ শিকদার বলেন, এ ঘটনায় সতমেয়ে ও বাবার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। সাজেনুরের বাবা আবদুল মালেক আকন বৃহস্পতিবার দৃপুরে একটি মামলা রুজু করেছে।

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...