ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - সাতক্ষীরার ভেজাল ছানায় উপকূলে মিষ্টি বাণিজ্য !

সাতক্ষীরার ভেজাল ছানায় উপকূলে মিষ্টি বাণিজ্য !

 

দেবদাস মজুমদার >>

নিম্ন মানের পাউডার দুধ, আটা-ময়দা, টিস্যুর সংমিশ্রনে তৈরী হচ্ছে ভেজাল ছানা। সাতক্ষীরা অঞ্চলে তৈরী এ ভেজাল ছানায় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়াসহ উপকূলীয় মিষ্টি ব্যসায়িরা ভেজাল মিষ্টি দ্রব্যের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। নোংরা পরিবেশে তৈরী হওয়া এসব ভেজাল ছানা ও মিষ্টির রমরমা নির্বঘœ বাণিজ্য । উপকূলে দুধের সংকটকে পূঁজি করে অসাধূ মিষ্টি ব্যবসায়িরা সাতক্ষীরার ভেজাল ছানার বাণিজ্যিক প্রসার ঘটিয়েছে। ভান্ডারিয়ার এক শ্রেণীর অসাধু মিষ্টি ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরা থেকে ভেজাল ছানা এনে ভান্ডারিয়া, রাজাপুর, ঝালকাঠী, বেতাগী, কাঠালিয়া, মঠবাড়িয়াসহ উপকূলীয় হাট বাজারে মিষ্টি ব্যবসায়িদের কাছে সরবরাহ করছে।
জানাগেছে, ভান্ডারিয়া পৌর শহর সহ বিভিন্ন হাটবাজারের অর্ধশত মিষ্টি কারাখানায় তৈরী হচ্ছে ভেজাল ছানা ও মিষ্টি। স্থানীয় এক শ্রেণীর অসাধু মিষ্টি ব্যবসায়িরা সাতক্ষীরার থেকে ভেজাল ছানা সংগ্রহ করে স্থানীয়ভাবে মিষ্টি তৈরী করে বাজারজাত করছে । টিস্যুপেপার, গুড়াদুধ, আটা ময়দা এবং কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেজাল ছানা। আর ওই ভেজাল ছানায় তৈরি করা হয় মিষ্টি। নোংরা পরিবেশে এসব ভেজাল মিষ্টি দ্রব্য বাজারজাতের ফলে সাধারণ মানুষ একদিকে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। আবার ভেজাল ছানায় সয়লাবের কারনে জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকী হয়ে দাড়িয়েছে। একটি মিষ্টি ব্যবসায়ি চক্র এই ভেজাল ছানার বাণিজ্যিক প্রসার ঘটিয়ছে ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভান্ডারিয়া পৌর শহরের মায়ের আশির্বাদ সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারীর মিষ্টি তৈরির কারখানা নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী করা হচ্ছে মিষ্টি সামগ্রী। সাতক্ষীরা থেকে আনা ভেজাল পচা দূর্গন্ধযুক্ত ছানা ঝুড়িতে এবং পলিথিনের ব্যাগে ঝুলিয়ে রেখে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। এছাড়া শহরের নিউ ইসলামিয়া মিষ্টি তৈরি কারখানা, অমল চন্দ্রের মিষ্টির তৈরির কারখানার অবস্থা একই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক মিষ্টি ব্যবসায়ী জানান, সাতক্ষীরা ঘোষ ডেয়ারীর মালিক পঞ্চনন ঘোষের এর ভাই কার্তিক ঘোষ এসব ভেজাল ছানা ভান্ডারিয়া বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পাইকারি দরে প্রতিকেজি দুই শত থেকে দুই শত ৫০ টাকায় বিক্রি করছে। স্থানীয় মিষ্টি ব্যবসায়িরা এসব ভেজাল ছানা ৪০০ টাকা কেজি দরে খুচরা বিক্রয় করে থাকেন।

তবে মায়ের আশির্বাদ মিষ্টি কারখানার মালিক পঞ্চানন ঘোষ দাবি করেন, এসব মিষ্টি সাতক্ষীরার ছানা দিয়েই তৈরি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে দুধের সংকটের কারনে সাতক্ষীরার ছানার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তবে তিনি ছানায় কোন ভেজাল নেই বলে দাবি করেন।
মোস্তফা হাওলাদার নামে এক মিষ্টির দোকানী বলেন, সাতক্ষীরার ছানা ছাড়া একটি মিষ্টির দোকানও চলবেনা। ছানা মিষ্টিতে এসব ভেজালের কারণে আমি এ ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসা যাচ্ছি।
ভেজাল ছানার ব্যাপারে বৃহস্পতিবার ভান্ডারিয়া উপজেলার ডেইরি মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর আহবায়ক মো. আলমগীর হোসেন ও সদস্য সচিব মো. গোলাম মাওলা মামুন ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তিনি সাতক্ষীরা থেকে আসা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ছানার অনুপ্রবেশ বন্ধের দাবি জানিয়ে অভিযোগ করেন, পাউডার দুধ, আটা-ময়দা, টিস্যু এবং কিছু দুধের সংমিশ্রনে ভেজাল ছানা তৈরি করা হচ্ছে। যা ভা-ারিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। মিষ্টির দোকানিরা বেশী লাভের আশায় কমদামে ভেজাল ছানা দিয়ে মিষ্টি তৈরি করা হয় এছাড়া ভেজাল দধি, ঘি, রস মালাই সন্দেস তৈরি হচ্ছে । আর এসব মিষ্টি খেয়ে মানব দেহের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।
ভা-ারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাশিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফখরুল ইসলাম মৃধা জানান, রাসায়নিক ক্যামিক্যাল মিশ্রিত এবং টিস্যু পেপার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে তৈরি করা মিষ্টি খেলে মানুষের ক্যান্সার,খাদ্য নালীতে প্রদাহ, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবে অরুচিসহ বিভিন্ন পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হতে পারে মানুষ। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় জন্য এসব ভেজাল মিষ্টি দ্রব্য গ্রহণ পরিহার করা উচিত।

এ ব্যাপারে ভান্ডারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন আক্তার সুমী বলেন,এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। শীঘ্রই সকল মিষ্টি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিটিং করে ভেজালমুক্ত মিষ্টি তৈরির জন্য নির্দেশ দেয়া হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালানা করা হবে।

সূত্র > কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

x

Check Also

মঠবাড়িয়ায় জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটি সংগঠনের উদ্যোগে রোজদারদের ইফতার বিতরণ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন জাতীয় মানবাধিকার ইউনিটির উদ্যোগে মাহে রমজানে সহস্রাধিক মানুষের ...