ব্রেকিং নিউজ
Home - অপরাধ - পিরোজপুরে রাসেল হত্যাকান্ড নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল

পিরোজপুরে রাসেল হত্যাকান্ড নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল

খালিদ আবু,পিরোজপুর >>
পিরোজপুরে একটি হত্যাকান্ড নিয়ে ক্ষমতাসীনদল আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে অস্থিরতা। ক্ষমতাসীন দলের এক পক্ষ নিহত যুবককে যুবলীগকর্মী দাবী করে হত্যাকান্ডের জন্য আরেক পক্ষকে দায়ী করছে। নিহত যুবকের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুকে ষ্ট্যাটাসে দেয়া হচ্ছে ‘আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা সাবধানে থাকুন’। আর যারা এসব পোস্ট করছেন তারা একপক্ষের সক্রিয় নেতাকর্মী। তবে এ হত্যাকান্ডে কোন রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা খুজে পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হত্যাকান্ডের পিছনে নিহত যুবকের গ্রামের বাড়ির আধিপত্ত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই অপরাধী চক্রের বিরোধকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করেছেন পুলিশ। আর যুবলীগের কর্মী হিসেবে যে দাবি করা হয়েছিল তাতে সম্পূর্ন দ্বিমত পোষন করেন জেলা যুবলীগ ও স্থানীয় ইউনিয়ন যুবলীগের দায়িত্ত্বশীল নেতৃবৃন্দ। সব মিলিয়ে এ হত্যাকান্ড নিয়ে দীর্ঘ অর্ধযুগ আওয়ামীলীগের নির্ঝঞ্জাট শহরের রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে চরম অস্থিরতা। যে হত্যাকান্ড নিয়ে এ রাজনৈতিক উত্তাপ সেই নিহত যুবক রাসেল সেখের(৩৮) বাড়ি সদরের বাইরে ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়নের লাহুরী গ্রামে।
জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যার আগে শহরের নতুন বাসষ্টান্ড এলাকায় রাসেল সেখকে কুপিয়ে গুরুতর জখমকরে সন্ত্রাসীরা। রাসেলের অবস্থা গুরুতর হওয়া পিরোজপুর সদর হাসাপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীর অবস্থায় রাত ১ টার দিকে মারা যায় রাসেল। এ হামলার জন্য আওয়ামীলীগের কোন্দল দায়ী বলে গনমাধ্যমে দাবি করেন পিরোজপুর জেলা পরিষদের একনির্বাচিত সদস্য। নিহত রাসেল এ নেতার মোটরসাইকেলে সার্বক্ষনিক সঙ্গী ছিলেন। তিনিই প্রথম দাবি করেন রাসেল যুবলীগ কর্মী ও ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে আছে ।
পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী জানান, নিহত রাসেলকে যুবলীগের কোন কর্মকান্ডে তিনি কখনও দেখেননি। তাকে ভাল চেনেনও না।
ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দিন জানান, তার ইউনিয়ন কমিটিতে রাসেলের নাম নেই। আর সে কখনও যুবলীগ করেছে বলে তার জানা নেই।
খোজ নিয়ে জানা যায়, পাড়েরহাট ইউনিয়নের লাহুরী গ্রামে এক দূধর্ষ এক অপরাধী বাহিনীর সাথে রাসেলদের পারিবারিক বিরোধ চলছিল। এ দুই পক্ষর মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা হয়েছে একাধিকবার। কয়েকমাস পূর্বে প্রতিপক্ষরা রাসেলের বড় ভাইকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। সম্প্রতি রাসেল তার এলাকায় যাওয়া বন্ধ করে শহরে বাসা নিয়ে থাকতো। নিহত হবার পরে রাসেলকে দাফনও করা হয়েছে শহরে নানা বাড়িতে।
ইন্দুরকানী উপজেলা পাড়েরহাট ইউনিয়নের লাহুরী এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক শেখের ছেলে রাসেল সেখ। রাসেলের উপর হামলার দিন রাতেই পুলিশ শহর থেকে সাঈদ নামে যুবলীগের এক কর্মীকে আটক করে। পরের দিন রাসেলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে সদর থানায় ১২ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিরোজপুর সদর থানার ওসি(তদন্ত) হাসনাইন পারভেজ জানান, এ হত্যাকান্ডে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এটি নিহত রাসেলের গ্রামে পেশাদার অপরাধী একটি চক্রের সাথে আধিপত্য নিয়ে ব্যক্তিগত বিরোধের কারনে ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানাগেছে। নিহত রাসেলের নামে ইন্দুরকানি থানায় ৪ টি মামলা রয়েছে। এছাড়া সাতক্ষীরা জেলায় ২টি মামলা আছে বলে শোনা গেছে। এ হত্যাকান্ডের ঘটনার অভিযুক্ত ওই এলাকার এক দূধর্ষ ডাকাতকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। তাকে পাওয়া গেলে হত্যাকান্ডের বিষয়টি সম্পূর্ন পরিষ্কার হবে।

Leave a Reply

x

Check Also

পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক আলমগীর হোসেন আটক

পিরোজপুর প্রতিনিধি : বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও পিরোজপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেনকে আটক করেছে ...