পিরোজপুর প্রতিনিধি >
পিরোজপুর সদর উপজেলার কলাখালী ইউনিয়নে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর উপর হামলা চালিয়েছে দুই বখাটে। সোমবার সকাল ১১টার সময় কলাখালী ইউনিয়নে দাউদপুর পল্লীমিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রীর উপর হামলা চালায় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ইমরান ও হাবিব। ছাত্রীটি স্কুল থেকে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার খাতা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তারা মেয়েটির উপর চড় থাপ্পর কিল ঘুষি মারতে থাকে। মেয়েটির সাথে থাকা কয়েক জন বান্ধবিদের সহায়তায় মেয়েটি নিকটস্থ একটি বাড়িতে ঢুকে প্রাণে বেচে যায়। পরে অভিভাবকরা এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। সোমবার দুপুরে পিরোজপুর সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন মেয়েটির খালা রাবেয়া আক্তার। বখাটে ইমরান একই এলাকার হানিফ শেখের ছেলে ও হাবিব মৃত হালিম শেখের ছেলে। এর মধ্যে হাবিব সদ্য জেল থেকে জামিন প্রাপ্ত আসামী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ইমরান ও হাবিব ইয়াবা ব্যবসা, মাদক সেবন এবং এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে বেড়ানো ছাড়া এদের কোন কাজ নেই। হামলার শিকার মেয়েটি তার নানা বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করতো। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে জনসম্মূখে এর আগেও বেশ কয়েকবার মেয়েটিকে জড়িয়ে ধরে অশোভন আচরন করেছে ইমরান ও হাবিব । এ নিয়ে শালিশ বৈঠকও হয়েছে। অভিভাবকদের উদাসিনতায় থানায় মামলা হয়নি। এ সুযোগ নিয়েই গত ১ সপ্তাহে বেশ কয়েকবার মেয়েটিকে উত্তক্ত ও কু প্রস্তাব দেয় ইমরান। রাজী না হলে দেখে নেয়ার হুমকিও দেয়। এমনকি মুঠো ফোনেও হুমকি দিতে থাকে। এরই জের ধরে সোমবার সকালে পরিকল্পিতভাবে মেয়েটিকে আক্রমণ করে এবং বেধরক মারপিট করে। এ ব্যপারে মেয়েটি জানায়, তার মা ঢাকায় চাকুরি করেন। বাবাও কাছে নাই এই সুযোগে বার বার আমার স্কুলে যাওয়ার পথে আমাকে নানা ভাবে উত্তক্ত করতো। এর আগেও লোক জনের সামনে আমার শরীরে হাত দিয়েছে। এবার নির্মমভাবে আমাকে মেরেছে। ওর অত্যাচার সব ধরনের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। এখন আমার আর বাঁচতেও ইচ্ছা করে না। মেয়েটির নানি নূরজাহান বেগম বলেন, আমরা সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সদস্য। কোন দিন এত খারাপ অবস্থা দেখিনি। এদের উৎপাতে এলাকার মানুষ এখন অসহায় পড়ছে।
দাউদপুর পল্লীমিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, নিজেকে বড় অসহায় লাগছে। এদের উৎপাতে মেয়েরা ঠিকমত স্কুলে আসা যাওয়া করতে পারে না। আমি চাই আসামী গ্রেপ্তার করে দৃষ্টাান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। কলাখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিমুল হাওলাদার বলেন, এরা এলাকার আপদ। এদের কারনে সাভাবিক জীবনযাত্রা বাধা গ্রস্থ হচ্ছে। সুতারং এদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুমুর রহমান বলেন, ঘটনা জানার সাথে সাথে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির খালা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামী গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।